আমরা জানি এ বছরের Survivor Series অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে Canada, Toronto তে। তবে হয়ত অনেকেই জানিনা, দীর্ঘ ১৯ বছর পর আবারো Canada তে হতে চলছে এ পে-পার ভিউ। পূর্বে ১৯৯৭ সালে Canada, Montreal, Quebec এ একবার অনুষ্ঠিত হয় SS, কিন্তু সেদিন এক দূর্ঘটনা ঘটে যে কারণে আর কানাডাতে যাওয়ার সাহস হয়নি WWE এর। যে দূর্ঘটনার শিরোনাম ছিল 'Montreal Screwjob' ।
শুরুতেই বলে নেই, এ সম্বন্ধে বিখ্যাত পোস্ট 'ক্লিক' এ অনেক পূর্বেই লেখা হয়েছে। এছাড়াও আরো অনেকে এ সম্পর্কে লিখেছেন। আসছে Survivor Series উপলক্ষে তাও আবার Canada তে। তাই আমার সামান্য চেষ্টা আবারো সেই সোনালী দিনের পেছনের ঘটনা তুলে ধরতে চাই। পোস্ট টা একটু বড় তাই সময় নিয়ে পরবেন,কারন একজন রেস্লিং ফ্যান অথবা WWE এর ফ্যান হিসেবে আমি মনে করি সবারি এই ঘটনা সম্পর্কে জানা দরকার।
এটি প্রো রেস্লিং ইতিহাসের সবচেয়ে নিন্দনীয় ঘটনা। যেটি ঘটেছিল ১৯৯৭ সালে। শুধু তাই নয় এটি হল ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও কুখ্যাত আন্সক্রিপ্টেড ঘটনা। এই ঘটনাটি ঘিরে রয়েছে অনেক কাহিনী অনেক গুজব অনেক কথা। বাস্তবটা অনেক জানেন অনেকে জানেন না। তাই শুরু থেকেই শুরু করি।
এই ঘটনাটির পেছনে মূলে ছিলেন Shawn Michael, Vince McMahon এবং Arl Hebner । ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত এরা ছিল The Attitude Era, ১৯৯৭ থেকে যেই এরা শুরু। অতএব এ ঘটনাও ঐ এরাতেই ঘটেছিল। সে সময়ে WWE এর মূল স্ক্রিপ্ট রাইটার ছিলেন Vince Russo এবং ঘটনাটি ঘটে 1997, Survivor Series এ Shawn Michaels vs. Bret Hart for the WWF Title এর জন্য ম্যাচটিতে।
• দ্যা ক্লিকঃ-
মন্ট্রিউল স্ক্রিউজব নিয়ে লেখার আগে আমাদের ক্লিক সম্পর্কে কিছুটা ধারনা রাখতে হবে এবং জানতে হবে।কারন মন্ট্রিউল স্ক্রিউজব আর ক্লিকের দৌরত্ব্য একি সুতোয় গাথাঁ। ক্লিক সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে অবশ্যই "ক্লিক" নিয়ে পোষ্টটি পড়ার কোন বিকল্প নেই। আপাতত ক্লিক থেকে নিজের ভাষায় ছোট করেই ক্লিকের গল্প বলি। শন মাইকেল কে আমরা সবাই চিনি এবং WWE তে তার অবস্থান ও তার এছিভমেন্ট সম্মন্ধেও জানি। শন মাইকেল কে বলা হয় প্রো-রেস্লিং জগতের সর্বকালের সেরা রেস্লারদের একজন। অসাধারন ইন-রিং স্কিল,টেকনিক্যাল এবিলিটি,মাইক স্কিল,ক্যারিজমা এবং একি সাথে নিজের লক্ষ্যে অর্জনের জন্য সবকিছু করতে পারার ক্ষমতার জন্য। শন মাইকেলের আজকের শন মাইকেল হয়ে উঠার পিছনে তার চতুরি,চৌকশ বুদ্ধির প্রশংসা করতেই হবে। শন মাইকেল-ই মুলত ক্লিকের সৃষ্টিকর্তা।
তখন রেস্লিং মানেই আমরা বিশাদেহি মানুষদের কুস্তি বা মারামারি বুজতাম। ৮০ দশকের শেষ দিকে এবং ৯০ দশকের শুরুর দিকেও এই নিয়ম মেনে চলতেন আমাদের ভিন্স দাদু। তখন তিনি বিশালদেহি ২৫০+ পাউন্ডারদের মেইন ইভেন্টে সুযোগ দিতেন।শন মাইকেল তখন ছিলেন লাইটওয়েট, ওজন টেনেটুনে ১৯৫-২০০ পাউন্ডের মত। শন মাইকেল তখন ছিলেন ট্যাগটিম ডিভিশনে। তিনি প্রত্যক্ষ করেন ভিন্স রেস্লারদের ইন রিং স্কিল ও মাইক স্কিলে তেমন নজর দিচ্ছেন না বরঞ্চ তাদের লোয়ার কার্ডে রেখে বিশালদেহিদের আপার কার্ডে সুযোগ দিচ্ছেন। শন মাইকেল মেইন ইভেন্টার হওয়ার জন্য নিজের অক্ষমতা বুজতে পারলেন এবং এরজন্য নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে অনেক কিছু পরিকল্পনা করলেন। এভাবেই ক্লিকের জন্ম হয়। ক্লিক মূলত শন, হান্টার (ত্রিপল এইচ), স্কট হল, চাইনা(খন্ডকালিন) এবং কেভিন নেশ নিয়েই গঠিত ছিল। মানে এরাই সব দিক থেকেই ক্লিকের নিয়োন্ত্রক ছিলেন।
যাইহোক, তখন WWE এর মুল ফেইস ছিলেন ব্রেট হার্ট। তিনি মেইন ইভেন্টে নিজেকে যোগ্য প্রমান করতে লাগলেন এবং একিসাথে ভিন্সের ও প্রিয় পাত্র হয়ে উঠলেন। শন বুজতে পারলেন ব্রেট ই তার পথের কাটা। শন ক্লিকের মাধ্যমে কেভিন নেশের সাথে টিমআপ করে এছাড়াও আরো কিছু পন্থা অবলম্বন করে এবং পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ভিন্সের মনযোগ নিজের উপর করাতে পারলেন এবং ভিন্স তাকে মেইন ইভেন্ট এ আনতে রাজি হলেন। তাকে বেবি-ফেইস গিমিকও দিয়ে দিলেন। এরপর ক্লিক-ই সর্বোপরি WWE তে তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ দেখানো শুরু করে।সেগুলো অনেক কথা।এবার আসি মন্টিউল স্ক্রিউজব নিয়ে।
• পটভূমিঃ-
সময়টা ১৯৯৭ সাল। আগস্ট মাসে হয়ে যাওয়া সামারস্ল্যেমে ব্রেট হার্ট WWF/E তে তার প্রথম WWE CHAMPIONSHIP জিতেন। আর খুশীর খবর এই যে সেই বছরের সারভাইভর সিরিজ অনুষ্টীত হবে ব্রেট হার্টের হোমটাউন মন্ট্রিয়াল,কানাডায়। একে তো নিজের প্রথম চ্যাম্পিয়ানশীপ জিতেছেন তারউপর নিজের হোমটাউনে সারভাইভর সিরিজের মত বড় ইভেন্ট, ব্রেট হার্ট তার হোমটাউনে ম্যাচ জিতবেন বলে অনেক আশা করে আছেন। সারভাইভর সিরিজে ব্রেটের সাথে শনের ম্যাচ ঠীক করা হয়। আগেই বলেছিলাম ক্লিকের দৌরত্বে এবং নিজের কারিশমায় শন ভিন্সের নজর কেড়েছেন এবং ভিন্স তাকে বেবিফেইস গিমিকও দিয়েছে, এটি শনের প্রথম মেইন ইভেন্ট আর একিসাথে ব্রেটের শেষ WWF ম্যাচ। এতোকিছুর ফল কখনো নষ্ট হতে দিবে না শন, তাই যেভাবেই হোক তার ম্যাচটা জিতা দরকার।
• WCW এর ভূমিকাঃ-
এবার একটু পিছনে যেতে চাই, ব্রেট হার্ট WWF এর চিরপ্রতিদন্ধি WCW থেকে একটা বিশাল অঙ্কের টাকার অফার পেয়েছেন প্রায় তিন মিলিওন ডলারের। যেহেতু অনেক টাকার চুক্তি তারউপর WWF এর সর্বোচ্চ টাইটেল হোল্ডার তিনি, তেমন কিছু এছিভ করার ছিলো না ব্রেটের, নতুন প্রমোশনে বিশাল টাকার অফার আর রেস্লিং এর টানে ব্রেট WCW এর সাথে চুক্তি করেন,যেহেতু ডিসেম্বর এ ভিন্সের সাথে তার চুক্তি শেষ হবে এরপর ব্রেট WCW তে চলে যাবেন এবং সেটা তিনি ভিন্স কেও জানিয়ে দেন ভিন্স তাকে যেতে বারন করেন এবং যেতে চাইলেও তাকে WWF TITLE টা হেরে ভিন্সের হাতে দিয়ে তারপর যেতে হবে বলে শর্ত দেন,কিন্তু ব্রেট রাজি হন না। তিনি WWF TITLE REGAIN করে চ্যাম্পিয়ান হিসেবে WWF থেকে রিটায়ার করে WCW তে যেতে চান। দুইজনের মধ্যেই দন্দ্বের সৃষ্টি হয়। যেহেতু ম্যাচটি শনের সাথে, তাই শন মাইকেল এই সুযোগকে কাজে লাগান এবং ভিন্স কে উৎকর্মা দেন তাকে জিতানোর জন্য। ভিন্স ও শন কে জিতাবে বলেই ঠিক করেন এবং ব্রেট কে হারতে বলেন শনের কাছে। কিন্তু ব্রেট কখনোই শনের কাছে চ্যাম্পিয়ানশিপ হারাবেন না তাও আবার নিজের হোমটাউনে।
• গেমপ্লানিংঃ-
ব্রেট চেয়েছিলেন শন কে হারিয়ে তিনি তার বেল্টটি নিয়ে রিটায়ার করতে এবং WCW তে নিজের নতুন ক্যারিয়ার শুরু করতে। শন ভাল মানুষের মতই একটি বুদ্ধি আটলেন। শন ব্যাকস্টেজে ব্রেটকে ক্লিকের একটি মিটিং এ ডেকে নেন এবং সেখানে ব্রেট কে ক্লিক এ যোগদান করতে বলেন। শনের উদ্দেশ্য ছিল যদি ব্রেট রাজি হন তাহলে ক্লিকের নেতা হিসেবে ব্রেট এর পুরো ক্যারিয়ারকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবেন শন। ব্রেট বুঝতে পেরেছিলেন এবং শন কে সরাসরি না করে দেন। শন বুজতে পারলেন বাকা আঙ্গুলে ঘি উঠাতে হবে। তিনি ভিন্সের কাছে গিয়ে তার কান ভারি করলেন। ব্রেট কে নিয়ে নয়-ছয় বুজিয়ে দিলেন,ব্রেট জিতে বেল্ট সহ WWF এ চলে যাবেন,আপনার বিরুদ্ধেই টাকা উঠাবেন।বেচারা ভিন্স ও নিরুপায়। WCW তে এরিফ বিশফ যে তার সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছেন। এইদিকে ব্রেট ও WCW তে চলে যাবেন তাহলে সে যেহতু তার প্রতিদন্দী প্রমোশনে চলে যাচ্ছে তাহলে তাকে জিতিয়েই বা ফায়দা কি? তার উপর শন এখন নতুন বেবিফেইস। ভিন্সের উপর কি চলছে তা আশাকরি বুঝতেই পারছেন। নিরুপায় হয়ে মহৎ উদ্দেশ্যে ভিন্স শনের বুদ্ধি নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন যেভাবেই হোক ব্রেট কে জিততে দেওয়া যাবেনা।কিন্তু কিভাবে হারাবেন? এই নিয়ে তিনি ভিন্স রুসোর(WWF এর হেড রাইটার) সাথে মিটিং এ বসলেন। রুসো একপ্রকার ব্লেম করেই ভিন্স কে বলে এতো ভাবার কি আছে?? রেফারিকে দিয়ে ব্রেটকে টেপ-আউট করিয়ে দিলেই তো হয়। যদিও রুসো ওই কথাটি নেহায়েৎ ঠাট্টা করেই বলেছিলেন কিন্তু ভিন্স এটাকে নিয়েই নিজের মাস্টার গেম প্লেন ক্রিয়েট করে ফেলেন।
দুঃখের বিষয় এই যে এখানে রুসোর কোন হাত ছিল না, রুসো শুধুই ঠাট্টা করেই বলেছিলেন আর স্ক্রিপ্টেও রুসো এমন কিছু লিখেন নি মোদ্দাকথা ভিন্স রুসো এবং ব্রেট এই গেম প্লেন টা নিয়ে কিছুই জানত না। ভিন্স ব্রেট কে বরাবরি আশস্ত করে এসেছিল যে তাকেই জিতানো হবে। ভিন্স এতোটাই শনের প্লেনে মগ্ন হয়ে গেছিল যে একবারো ভাবেনি ব্রেট কে তার হোমটাউনে হারালে কিরকম বিরুপ প্রতিক্রিয়া ঘটবে। রোস্টারের অনেকেই এই কুকির্তির আভাস পেয়েছিল। তাই তারা ব্রেট কে সতর্ক করে দেন কারন যে কোন সময় যে কনোকিছু ঘটতে পারে। ব্রেট এর ভাই ওয়েন হার্ট তাকে ম্যাচ না খেলার জন্যে বলেন কিন্তু ব্রেট রাজি হন না। নাটালিয়ার বাবা জিম নাইডহার্ট ব্রেট হার্টকে পরামর্শ দিলেন ম্যাচে কিক-আউট করতে এবং ম্যাচ হাতছাড়া না করতে,যে কোন মুহুর্তের জন্য প্রস্তুত থাকতে। ব্রেট এটা নিয়ে একটু চিন্তিত হলেন,তিনি আবার ভিন্সের কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেন,ভিন্স বরাবরের মতোই মিথ্যা কথা বলে তাকেই জিতানো হবে বলে আশস্ত করেন।
এই নিয়ে WWE এর ভিতরে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। WWE এর বিশস্ত লয়াল আন্ডারটেকার ব্যাকস্টেজে শন মাইকেল কে হুমকি দেন যদি কোন উল্টা-পাল্টা হয় তবে শন কে টেকার জিবন্ত কবর দিয়ে দিবেন। শন খুব ভয় পেয়ে যান এবং ক্লিকের মেম্বার ও তার ক্লোজ ফ্রেন্ড হান্টার(ত্রিপল এইচ) আর চায়ানা মিলে টেকার কে নয়-ছয় বুঝিয়ে-শুঝিয়ে জায়গা থেকে সরিয়ে দেন। অবশেষে আসলো সেই দিন।
• সারভাইভর সিরিজ ১৯৯৭ :-
নভেম্বরের ৯ তারিখ,১৯৯৭। শু্রু হল সারভাইভর সিরিজ। প্রথম ম্যাচে স্টোন্ড কোল্ড ওয়েন হার্টকে হারিয়ে IC TITLE জিতেন। দর্শক রা ক্ষেপে যান এবং স্টোন্ড কোল্ডকে বু দিতে থাকেন অথচ তখন কোল্ড ছিল ফেইস তারপর ও বু পান। কেননা ওয়েন হার্ট ছিলেন নিজের হোমটাউনে, আর নিজের হোমটাউনে নিজেদের সুপারহিরোকে কে না চান বিজয়ী হিসেবে। শো চলতে থাকে, এইদিকে ভিন্সের রুমে চলছে মন্ট্রিউল স্ক্রিউজবের নীল নকশা প্রনয়নের কাজ।তিনজন মানুষ রুমে আছেন। একজন ভিন্স নিজেই, অন্যজন শন মাইকেল এবং আরেকজন তাদের ম্যাচের সিনিয়র রেফারি আর্ল হেবনার। তারা তাদের গেম প্লেন করে ফেলেন। প্লেন টা হল শন ব্রেট কে সাবমিশন লক ধরলেই রেফারি বেল বাজিয়ে দিবেন,ব্রেট টেপ-আউট করুক বা না করুক। ভিন্স রুসো যেটা বলেছিলেন সেটাই ভিন্স নিজের গেইমপ্ল্যান বানিয়ে ফেলেছেন। আগেই বলেছি এখানে ভিন্স রুসোর কোন হাত ছিলো না। এবং তিনি স্ক্রিপ্টেও এমন কিছু লিখেননি। কিন্তু ব্যাপারটা যখন শনের ক্যারিয়ার গড়ার, সেখানে শনের চৌকশতাই আগে আসবে, সেটা আরেকবার জানান দিয়ে দিলেন শন মাইকেল।
ব্রেট হার্ট খুব সাচ্ছন্ধেই আছেন। কারন ভিন্স তো বলেছেন-ই ব্রেট কে জিতাবেন, কিন্তু ভিন্স,শন আআর রেফারি যে চাল চালছেন ভয়াবহতা সম্পর্কে টের পাননি ব্রেট। এইদিকে ভিন্স পর্যাপ্ত ব্যাকআপ নিয়ে রেখেছেন, কানাডিয়ান রা তাদের হিরো ব্রেট হার্টের হার দেখলে কিনা কি করে বসে তাই প্রচুর সিকিউরিটি, কড়া নিরাপত্তা সব আগে থেকেই ঠীক করে রেখেছেন।
• ব্রেট বনাম শনঃ-
অবশেষে ম্যাচ শুরু হল। ব্রেট খুব চৌকশ ভাবেই ম্যাচ চালিয়ে যাচ্ছেন, কোন মতেই শন কে সাবমিশন লক ধরতে দিচ্ছেন না। ম্যাচের মধ্যেই দুইজনের দন্দ্বের আরেক ম্যাচ চলছে। রেফারিও সুযোগের অপেক্ষায়। হটাৎ শন মাইকেল ব্রেটকে তার নিজের(ব্রেটের) সাবমিশন হোল শার্পশুটার ধরেন। ব্রেট তাড়াতাড়ি লক আনহোল করলো,কিন্তু রেফারি এর আগেই বেল বাজিয়ে দিল, ব্রেট হতবাক এবং কিছু বুঝে উঠার আগেই রেফারি তাড়াতাড়ি শন মাইকেল কে বেল্ট দিয়ে রিং থেকে পলায়ন করলো। শন মাইকেল ও বেল্ট নিয়ে উদযাপন না করে তার সঙ্গি ত্রিপল এইচ আর চায়ানাকে নিয়ে পলায়ন করল। পুরা কানাডাবাসী হতবাক হয়ে রিং এর দিকে তাকিয়ে রইলো। একি হলো, ব্রেট তো ট্যাপ-আউত করেনি, ব্রেট হা্র্ট কিভাবে নিজের সাবমিশন লকে টেপ-আউট করলো?? কিভাবে শন জিতলো??? এতো বেঈমানি!
রিং এর পাশে দাড়িয়ে ছিল ভিন্স,কিছুটা হতবুদ্ধি,অসহায় হয়ে ব্রেটের দিকে তাকিয়ে আছেন। ব্রেট মুখ ভর্তি থুথু দেন ভিন্সের গায়ে। মন্ট্রিউলের দর্শক রা তখন উম্মাদ হয়ে গেছেন। কয়েকশ সিকুরিটি তাদের থামাতে পারছেন না। ভিন্সও পলায়ন করলেন। ব্রেট রিং এ দাঁড়িয়ে ভিন্সকে গালাগালি শুরু করলেন, রিং থেকে নেমে ব্রেট আর তার পরিবার পাগলের মত ভিন্স কে ব্যাকস্টেজে খুজে বেড়াচ্ছেন। শন ও গায়েব, রেফারিও গায়েব ভিন্স ও গায়েব। এইদিকে টেকার পাগলের মতো ভিন্স আর শন কে খুজে বেড়াচ্ছেন কিন্তু পাচ্ছেন না। অবশেষে ভিন্স তার সাঙ্গপাঙ্গ সহ একটি লকার রুমে রয়েছেন এটি জানতে পারল ব্রেট। ব্রেট লকার রুম ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকেন এবং একটু পর রাগিভাবেই বের হয়ে যান এবং তার পরিবার নিয়ে এরেনা ত্যাগ করেন। কিছুক্ষন পর ভিন্স বের হন।চোখে মুখে ঘুষির দাগ, চোখের নিচে নীল দাগ পড়ে গেছে।
ভিন্স ঘটনা সামাল দিতে গিয়ে নিজেকে সেক্রিফাইচ করেছেন। এই ঘটনায় ভিন্সের ব্যাবসায় প্রচুর নেগেটিভ রিয়েকশন দেখা যায়। বিভিন্ন রেস্লিং ম্যাগাজিনে এটি উঠে আসে। ব্যাকস্টেজে টেকার ভিন্স রুসোকে গিয়ে ধরেন। রুসো এর কিছুই জানেন না এবং তিনি ব্রেট কে হারানোর কোন স্ক্রিপ্টও লিখেন নি। ঘটনার রেশ কাটতে বহুদিন চলে যায়। এরপর ব্রেট WCW তে চলে যান এবং পরিবারের সবাইকে সতর্ক করে দেন WWE তে যেন কোনদিনও কেউ পা না বাড়ায়। এই ছিল মন্ট্রিউল স্ক্রিউজবের কাহিনি।
• পরবর্তি অবস্থাঃ-
যতকিছুই হোক,হাজার বিতর্কের পরেও শন মাইকেল তো WWE CHAMPION এবং কম্পানির টপ ফেইস হয়ে গেছেন। শন আর তার সাথিদের ক্লিকের মাধ্যমে রাজত্ব চলতে থাকে WWE তে।
এই পোস্ট পড়ার পরে অনেকেই হইতো শন মাইকেল কে বেঈমান,সার্থপর বলবেন। আসলে নিজের ভাল পাগল ও বুজে ভাইরা। এইক্ষেত্রে শন মাইকেল নিজের ভালোর জন্যই এসব করেছেন। কিছুটা অসাধুপন্থা তিনি করেছেন ঠিকি কিন্তু সবকিছু নিজের বুদ্ধি দ্বারাই করেছেন। নিজের যোগ্যতার ফল যেখানে অনিশ্চিত সেখানে বাকা আঙ্গুলে ঘি উঠানো বড় অপরাধ না। এরপর শন নিজেকে পুরোপুরি শুধরে নেন। ২০০০ সালের পর রিটার্ন করে তিনি মাত্র ২বার ওয়াল্ড টাইটেল জিতেছেন, তার পরিবর্তে হেরেছেন সিনা,রেন্ডির মত তারকার কাছে, তাদের ক্যারিয়ার গড়ে দিয়েছেন।
এইসব ব্যাপারে আমাদের জানাটা কষ্টকর হত যদিনা এবি হাসান ভাই ক্লিক নিয়ে তার সেই ঐতিহাসিক পোষ্ট টি না করতেন, পোষ্ট টি আমাদের পেজে দেওয়া আছে। পড়ার আমন্ত্রন রইলো।
ভিডিওটি দেখে নিতে পারেনঃ
ধন্যবাদ।।