গত Raw তে ডাব্লিউডাব্লিউই ইউনিভার্স কে চমকে দিয়ে রোমান রেইন্স ঘোষণা করেছিলেন যে তার লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে এবং সেই সাথে তার ইউনিভার্সাল চ্যাম্পিয়নশিপ টিকে পরিত্যাগ করেছিলেন। যে প্রোমোর শুরু হয়েছিল দর্শকদের বু দিয়ে সেটি শেষ হলো সেই একই দর্শকদের "Thank you Roman" চ্যান্ট দিয়ে। না দেখলে মন ভাঙ্গা ভিডিওটি আবার দেখে নিতে পারেন-



যদিও আসলে এটি 11 বছর আগে ধরা পড়ে এবং তখন দ্রুত সেরে উঠলেও এখন আবার সেই রোগ পুনরায় থাবা বসিয়েছে। Roman কি এনাউন্স করবে তা ব্যাকস্ট্যাজ এর কেউই জানতোনা। এমনকি Dean and Seth ও জানতোনা। ওদের শুধু বলা হয়েছিলো Roman তার টাইটেল ড্রপ করবে। অ্যান্ড তারা যাতে এসে ওর সাথে অন এয়ারে দেখা করে। কিন্তু Roman কি কারণে টাইটেল ড্রপ করবে তাদেরও জানানো হয়নি। কেন এইসব গোপন রেখেছিল রোমান? ট্রিপল এইচ এই ব্যাপারে বলেছেন-

"এই ব্যাপারে খুব কম লোকই জানতো এবং আমি তার সাথে এই নিয়ে কথা বলেছি, সে তার ক্যারিয়ারের একটা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছাবার আগে এই ব্যাপারে কাউকে জানতে দিতে চাইতো না কারণ সে কখনই চাইতো না লোকেরা ভাবুক যে সমবেদনা দেখিয়ে বা কোন এক কারণে তাকে এই সাফল্য অর্জন করতে দেওয়া হয়েছে। সে চেয়েছিল একদম শেষে বলবে - দেখো আমি এইসব পার করে এসেছি, তোমার ইচ্ছা থাকলে সবকিছুই সম্ভব, এটা কোন মৃত্যুদণ্ড নয়! " অর্থাৎ রেইন্স চেয়েছিল তাকে যেন আর বাকি সব রেসলারের মতো করেই দেখা হয়। 

এখন রেইন্সের কি হবে? - রেইন্স প্রোমোতেই বলে যে সে রেসলিং থেকে রিটায়ার করবেন না এবং লিউকেমিয়াকে পরাজিত করে আবার রিং এ ফিরে আসবে, কিন্তু আসলেই কি তাই? সেটা বোঝার আগে লিউকেমিয়া কি জিনিস সেই ব্যাপারে দেখে আসুন এই পোস্টে। পোস্ট দেখে বুঝতে পারবেন লিউকেমিয়া আসলেই তেমন মরণ রোগ নয়, হয়তো আরও ২-৩ বছর লাগবে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে রিঙে ফিরে আসতে কিন্তু সবকিছু ঠিক থাকলে সে রিং এ ফিরে আসবেই। আর তাছাড়াও তাকে টিভিতে দেখা যাবেনা এমনটা নয়। ACE Comic Con আনাউন্স করেছে যে পরের বছরের ১১ই জানুয়ারিতে অ্যারিজোনার ইভেন্টে রোমান রেইন্স আসবেন। 

সুতরাং আমরা আশা রাখতেই পারি ভবিষ্যতে WWE এর ইভেন্টে রেসলিং করতে না দেখলেও টিভি আপিয়ারেন্স দেখতেই পারি, যদিও এই রোগের ফলে তার ক্যারিয়ারে যে বড় নেগেটিভ ইফেক্ট পরবে সেটা অনিবার্য। আপনি রোমানকে হেট করুন বা লাভ করুন, যদি তার এই দুঃসময়ে তার পাশে না থাকেন তাহলে আপনি হয়তো রেসলিং ফ্যানই নন! পোস্টটা শেষ করার আগে তার এ বছরের খেলা পিপিভি ম্যাচগুলোর রেটিংস দিলাম :

• Royal Rumble: 4.25★ (Royal Rumble Match)

• Elimination Chamber: 3.75★ (6 Man Elimination Chamber Match) 

• WrestleMania: 3★ ( Vs Brock Lesnar) 

• Greatest Royal Rumble: 1★ ( Vs Brock) 

• Backlash: 1.5★ (Vs Samoa Joe) 

• Money In The Bank: 2.5★ (Vs Jinder)

• Extreme Rules: 3.50★ (Vs Lashley)

• Summerslam: 2.50★ (Vs Brock)

• Hell In A Cell: 3.25★ ( Vs Braun)

মোট ম্যাচঃ ৯ টি
মোট রেটিংঃ ২৫.২৫ 
গড়ঃ ২.৮০ 

গেট ওয়েল সুন রোমান, থ্যাঙ্ক ইউ রোমান ❤।


আপডেট ঃ রোমান রেইন্স লিউকিমিয়া জয় করে রিং এ প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এবং বর্তমানে Covid-19 চলাকালীন পরিস্থিতিতে রিং থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন (বিস্তারিত জানতে তার জীবনী পরে দেখতে পারেন)। 

এখন রোমান রেইন্সের কি হবে?



• লিউকেমিয়া কি?

এক কথায় বললে এটা (লিউকেমিয়া) হলো " ক্লোনাল ম্যালিগন্যান্ট ডিজিজ "। কি? বুঝতে পারেন নি? যারা বুঝতে পারেননি তাদের আরেকটু বুঝিয়ে বলি তাহলে। আমাদের শরীরে থাকে ব্লাড স্টেম সেল, যখন এই সেলগুলোর অস্বাভাবিক বিভাজন হয় তখনই এই রোগের সূত্রপাত ঘটে। শুরুটা হয় বোন ম্যারোতে এবং শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বেড়ে যায় অস্বাভাবিক ভাবে। ব্যাপারটা অনেকটা এমন, রক্তের অসংখ্য শ্বেত কনিকা যা পুনরায় বিভাজনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে এবং কোষ বিভাজনের একটি ভিন্ন স্টেজে অবস্থান করে সেগুলো বোন ম্যারো এবং অন্যান্য রক্ত উৎপাদনকারী টিস্যুতে গিয়ে জমা হয়। এই অস্বাভাবিক টিস্যুগুলো অন্যান্য প্রত্যঙ্গের টিস্যুগুলোতে ছড়িয়ে গিয়ে প্রচুর পরিমাণে অস্বাভাবিক টিস্যু উৎপন্ন করে ফলে সার্বিক রক্ত উৎপাদন প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয়।ফলে লিউকেমিয়ার রোগীদের রক্ত শূন্যতা, হেমোরেজ, ও ইনফেকশনের মত লক্ষণ দেখা দেয়। নিচের চিত্রে সাধারণ রক্তের সঙ্গে লিউকেমিয়ার ফারাক দেওয়া হল ঃ



• রোগের কারণ :

এ রোগের আসল কারণ এখনও অজানা। তবে নিম্নলিখিত কারণগুলোকে দায়ী করা হয়-

রেডিয়েশন, রঞ্জনরশ্মি। আধুনিক বিশ্বে বিভিন্ন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যাপক প্রসারে লিউকেমিয়া রোগটি বেশি হচ্ছে। উল্লেখ্য যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর জাপানিদের মধ্যে এই রোগ খুব বেড়ে যায়।
সাইটোটক্সিক ড্রাগ- ক্যান্সারে ব্যবহৃত বিভিন্ন ওষুধ ব্যবহারের ফলে এই রোগ হতে পারে।কিছু কিছু ভাইরাসকে এই রোগের জন্য দায়ী করা হয়।

• রোগের লক্ষণসমূহ :

১. লিউকেমিয়ার রোগীরা সাধারণত দুর্বলতা, রাতে ঘামানো, হালকা জ্বর নিয়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে থাকে।এ সকল উপসর্গ অতিরিক্ত শ্বেত কণিকা তৈরি হওয়ার কারণে হয়ে থাকে।

২. প্লীহার আকার বৃদ্ধির ফলে রোগী পেটে ভার ভার বোধ করে। এছাড়া ঘটনাক্রমে শ্বেত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি ধরা পড়ে।

৩. কিছু ক্ষেত্রে রোগীর শ্বাসকষ্ট ও ঝাপসা দৃষ্টির সমস্যা হয়। এ রোগের মাত্রা বৃদ্ধি (একসিলারেটেড পর্যায়ে) পেলে জ্বর হয় তবে সংক্রমণ, অস্থিতে ব্যথা বা প্লীহার বৃদ্ধি হয়।

৪. ওজন হ্রাস পায় এবং অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

• শনাক্তকরণ :

ব্লাড টেস্ট আর বোন ম্যারো বায়োপসি র মাধ্যমে এই রোগ শনাক্ত করা যায়। যে কোন বয়সে এটা হতে পারে। পযার্প্ত চিকিৎসায় এই রোগ পুরোপুরি ভাল হয়। একটু সময়সাপেক্ষ অবশ্য।

• চিকিৎসা পদ্ধতি :

লিউকেমিয়ার চিকিৎসাগুলোর মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি, রেডিওথেরাপি, বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট, সাপোর্টিভ কেয়ার। পেশেন্ট কে অধিক মাত্রায় প্রোটিন, ক্যালরি ও আয়রন যুক্ত খাবার খেতে হবে।

লিউকেমিয়া রোগ পুরোপুরি সেরে যায় যদি প্রোপার ট্রিটমেন্ট পাওয়া যায়, অর্থাৎ এই রোগ নিরাময় যোগ্য। ১৯৭৫ এর দিকে এই রোগ থেকে সেরে ওঠার হার ছিল ৩৩% যেটা ২০০৯ এ হয়েছে ৬৩%, তাই রোমান রেইন্স ও এটার বিরুদ্ধে ফাইট করে জয়ী হবে, অন্তত এই আশা আমরা করতেই পারি। 

♣ বি.দ্রঃ উপরের তথ্যগুলো উপস্থাপন করতে বিভিন্ন জার্নাল এর সাহায্য নেয়া হয়েছে।
• লেখক ঃ ‎Koushik Deb

লিউকেমিয়া রোগটির ব্যাপারে তথ্য জেনে নিন।